অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। হোক সেটা ফলমূল কিংবা সুস্বাদু কোনো খাবার। এখন যেহেতু মৌসুমি ফলের রমরমা তাই অনেকেই দেদারসে খাচ্ছেন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেয়ে ফেলছেন আম, কাঁঠাল কিংবা লিচু। যা স্বাস্থঝুঁকির কারণ হতে পারে। কেননা, এই তিনটি ফলে প্রচুর পরিমানে ক্যালোরি বা সুগার রয়েছে। তাই তাদের ফল খেতে হবে বুঝে শুনে।
ক্যালোরি বুঝে খান
যে কোনও ফলই ব্যক্তিবিশেষে ডায়েটের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে খাওয়া উচিত। কারণ সমস্ত রোগ আসলে স্থূলত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত। কোলেস্টেরল বেশি থাকুক বা ডায়াবেটিস কিংবা রক্তচাপ, যে কোনও রোগেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। তাই আম, কাঁঠাল বা লিচুর মতো বেশি ক্যালোরিযুক্ত ফল খেলে খাদ্যতালিকা থেকে খাবারের পরিমাণ অনেকটাই কমাতে হবে। পাশাপাশি মিষ্টি খেতে ইচ্ছে হলে সেক্ষেত্রে বিস্কুট বা কোনও প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার চেয়ে মৌসুমি ফল খাওয়া অপেক্ষাকৃত ভাল।

এই ধরনের ফলে প্রাকৃতিক ফ্রুকটোজ রয়েছে যা পরিমিত খাওয়াই যায়। সাধারণত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সারাদিনের একটি আম বা বড় কোয়া দুই পিস কাঁঠাল কিংবা চার-পাঁচটা লিচু খাওয়া যেতেই পারে।
আমের ভাল-মন্দ

আমের মধ্যে ফাইবার, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম থাকলেও গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম থাকে। সেজন্যই ডায়াবেটিস থাকলে খুব বেশি আম খেতে নিষেধ করা হয়। তবে আমের সঙ্গে কোন খাবারটি খাচ্ছেন তা দেখে নেওয়া জরুরি। যেমন আম দিয়ে পায়েস, সন্দেশ ইত্যাদি খাবার কিংবা দুপুরে ও রাতের খাবারের শেষে প্রতিদিন আম খাওয়ার অভ্যাসও সঠিক নয়। পরিবর্তে ব্রেকফাস্টে হাই ফাইবার খাবার যেমন ওটস, ডালিয়া ইত্যাদির সঙ্গে এক পিস আম খেতে পারেন। কিন্তু একসঙ্গে তিন-চারটে আম খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।

কাঁঠালের কার্যকারিতা
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে রাতের খাবার খেয়ে প্রতিদিন এক-দুই কোয়া কাঁঠাল খেতে পারেন। কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে এবং হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া ক্যালশিয়ামের ঘাটতি থাকলে, অস্টিওআর্থারাইটিসেও ডায়েটে রাখতে পারেন। আবার কাঁঠাল থাইরয়েড হরমোনের মেটাবলিসমে অর্থাৎ থাইরয়েড হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই থাইরয়েড রোগীরাও সারাদিনে এক-দুই কোয়া কাঁঠাল খেলে উপকার মিলবে।
লিচু খান শরীর বুঝে
লিচুর মধ্যে যেহেতু সুগারের পরিমাণ বেশি থাকে তাই ডায়াবেটিসে বুঝে খেতে হবে। মিড-মর্নিংয়ে কিংবা বিকেলে চার-পাঁচটা লিচু খেতে পারেন। লিচুতে পটাশিয়াম বেশি থাকে বলে কিডনির সমস্যা থাকলে খাওয়া উচিত নয়। তবে এতে ভিটামিন বি১২ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। থাইরয়েড রোগীদেরও বুঝে শুনে লিচু খেতে হবে।
কোলেস্টেরলের বাধা নেই
কোলেস্টেরলের সঙ্গে ফলের কোনও সম্পর্ক নেই। কোলেস্টেরল বাড়লে খাবারে ফ্যাটের উপাদান খেয়াল রাখতে হবে। তবে ডায়েবেটিসে যেমন কোনও নির্দিষ্ট ফল খেলে রাতারাতি রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, কোলেস্টেরলে কিন্তু সেরকম হয় না।
তাই ফলের এই মৌসুমে আম, কাঁঠাল ও লিচু হিসাব করে খান। সুস্থ থাকতে ফল খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। তবে তা পরিমিত।
Discussion about this post